সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ , ১৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপিতে চাঁদাবাজের ঠাঁই নেই : মাহবুবুর রহমান ৯ মাসে ছয়শ’র বেশি ধর্ষণ এনসিপির কেন শাপলাই চাই? সুনামগঞ্জে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হলো শারদীয় দুর্গোৎসব ৪০০ ছাড়িয়েছে কাঁচা মরিচ, শতকের কাছাকাছি বেশিরভাগ সবজি ‎জামালগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা দেখার হাওর ঢেকে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উকিলপাড়ায় পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গমন : দুর্ঘটনার আশঙ্কা দুর্গাপূজা : মাহাত্ম্য ও তাৎপর্য পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ৩ ফার্মেসিকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা পথে যেতে যেতে: পথচারী সুনামগঞ্জ পৌর শহরে স্পিডব্রেকারগুলো যেন মরণফাঁদ! ‎জামালগঞ্জে 'উন্নতি সঞ্চয় ঋণদান সমবায় সমিতির' শিক্ষা উপকরণ ও  বস্ত্র বিতরণ সুনামগঞ্জে 'ধর্ষণ মামলায়' আসামিদের শাস্তির দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন নির্বাচনের প্রস্তুতি অনেক এগিয়ে নিয়েছি : সিইসি আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদন্ড আজীবন জনগণের সেবা করতে চাই : পাবেল চৌধুরী ফার্মেসিতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ‘ফিজিশিয়ান স্যাম্পল’

ভাটির কৃষিসভ্যতা রক্ষায় পূর্ণাঙ্গ খালের তালিকা জরুরি

  • আপলোড সময় : ২০-০৮-২০২৫ ০৮:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০৮-২০২৫ ০৮:৩৩:২৫ পূর্বাহ্ন
ভাটির কৃষিসভ্যতা রক্ষায় পূর্ণাঙ্গ খালের তালিকা জরুরি
সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে দেশের কৃষিনির্ভর জনপদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ জেলার কৃষি, মৎস্য ও নদী-খালনির্ভর জীবনব্যবস্থা প্রাকৃতিক স্বাভাবিক প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। এসব খালই যুগ যুগ ধরে ভাটির কৃষিসভ্যতাকে বিস্তার ও স্থিতি দিয়েছে। সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সুনামগঞ্জ জেলার খালগুলোর যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করে পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, সেটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, এই তালিকা থেকে জেলার বহু প্রাচীন ও কার্যকর খালের নাম বাদ পড়ে গেছে বলে স্থানীয় প্রবীণ কৃষক ও অভিজ্ঞজনেরা অভিযোগ তুলেছেন। স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং প্রবীণ নাগরিকদের মতে, মৌজা ম্যাপ ও সরকারি রেকর্ড ঘেঁটে সহজেই প্রকৃত খালগুলোর পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা যেত। কিন্তু তা না করে খ-িত তথ্যের ভিত্তিতে তালিকা প্রস্তুত করায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার বহু খাল সরকারি নথি থেকে গায়েব হয়ে গেছে। এমনকি সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার ইতিহাসবহুল ধোপাখালি, কামারখাল, বলাইখাল কিংবা তেঘরিয়া খালের মতো পরিচিত খালও তালিকাভুক্ত হয়নি। খালগুলো শুধুমাত্র ভৌগোলিক উপাদান নয় - এগুলো ভাটির মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও কৃষিসংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্ষায় নৌযান চলাচল, শুষ্ক মৌসুমে সেচব্যবস্থা পরিচালনা, মাছ উৎপাদন ও পানি নিষ্কাশনের কাজে এগুলো প্রকৃতির প্রাকৃতিক নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করতো। পলি পড়ে কিংবা পরিকল্পনাহীন বাঁধ নির্মাণের কারণে অনেক খাল সংকুচিত বা ভরাট হয়ে গেলেও সরকারি রেকর্ডে এসব খালের অস্তিত্ব এখনো রয়ে গেছে। সুতরাং সরকারি তালিকা থেকে এসব খালের নাম বাদ পড়া মানে শুধু ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মুছে যাওয়া নয়, ভাটির কৃষিসভ্যতার আদিপ্রাণকেও অস্বীকার করা। এই প্রেক্ষাপটে যেখানে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নদী-খাল পুনরুদ্ধার ও খননের কথা বলছে, সেখানে খালসমূহের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয়ে ওঠে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অবিলম্বে স¤পন্ন করার মতো একটি কাজ। এ কাজ যদি মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞ মানুষের সঙ্গে আলোচনা ও মৌজা ম্যাপ বিশ্লেষণের ভিত্তিতে করা যায়, তাহলে কোনো খালের নাম বাদ পড়বে না। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডও পূর্ণাঙ্গ তালিকা পেলে বিশেষভাবে উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেছে। আমরা মনে করি, খালগুলোর পূর্ণাঙ্গ ও হালনাগাদ তালিকা প্রস্তুতে জেলা প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। স্থানীয় প্রবীণ কৃষক, জনপ্রতিনিধি ও ভৌগোলিক বিশেষজ্ঞদের স¤পৃক্ত করে তালিকা করতে হবে। একই সঙ্গে যেসব খাল ইতিমধ্যে ভুলবশত বাদ পড়েছে, সেগুলোর নাম সংগ্রহ করে নতুন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অন্যথায় ভাটির ভূমি বৈশিষ্ট্য এবং কৃষিসভ্যতার প্রামাণ্য ইতিহাস অদূর ভবিষ্যতে বিলীন হয়ে যেতে পারে, যার দায় বর্তমান প্রজন্মকেই বহন করতে হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স